ক্যামেরুন গোল করেছে, গোল আটকেছে, তাই জিতেছে! ব্রাজিল গোল করেনি, আটকাতেও পারেনি, তাই হেরেছে! ব্যাস, এই হলো total summary! তবে গোল যে একটাই খেলো, এটাই অনেক! এডারসন না কয়েকটা আটকালে ব্যাপারটা আরো খারাপ হতো। ফলাফলটা অবাক করে দেওয়ার মতো তেমন কিছু নয় অবশ্য। এটা হওয়ারই ছিল, দেখার ছিল কবে নাগাদ হয়! এই ব্রাজিল team নাকি বিশ্বকাপ জিতবে.... তাহলেই হয়েছে! এরকম কিছু ঘটলে না দেখা যায় এদের সমর্থকেরাই চমকে উল্টে গেছে শকের চোটে! মানছি, আগের দুটো ম্যাচের তৈরী প্লেয়াররা অধিকাংশই খেলেনি, কিন্তু তা বলে এত সুযোগ নষ্ট হবে? বিপক্ষের পা থেকে বলের দখল নিচ্ছে তাড়াতাড়ি, নিজেদের মধ্যে স্বাভাবিক বোঝাপড়ায় দারুন সব মুভমেণ্ট তৈরি করছে, বিপক্ষের পেনাল্টি সীমানার বক্সে ঢুকে পড়ছে অতর্কিতে। কিন্তু ব্যস, তারপর কি যে হচ্ছে কে জানে, ওই পর্যন্ত গিয়ে যেন কিরকম তারা কুম্ভমেলায় হারিয়ে যাচ্ছে। এক মার্টিনেল্লি বাদে কাউকে গোলে বল রাখতে দেখলাম না। শুধু ওর জন্যই খারাপ লাগছিল, প্রচুর চেষ্টা করেছিল কিন্তু প্রতিবার বিফল হলো। Unfortunate, but hopefully he will have his day sometime in the future! বাকিরা তো শুধু ছড়ানোর প্রতিযোগিতা করছিল। ব্রুনো গিমেরেশের কথাই ধরা যাক না হয়। তার অবস্থা হলো রথের মেলায় গিয়ে রথটাই দেখতে না পাওয়ার মতো। ম্যাচের দিনে তাকে বোধহয় বল সমেত খালি গোলপোস্টের সামনে ছেড়ে দিলেও গোল করতে অক্ষম হতো। এডারসন সেই তুলনায় গোলটা ঠিকঠাক রক্ষা করছিল। যে গোলটা খেয়েছে সেটা তার ভুলের তুলনায় বিপক্ষের কৃতিত্ব বেশি দাবী করবে। গোলপার্থক্য বাড়তে পারতো তার দারুন কিছু সেভ না থাকলে।
অপরদিকে ক্যামেরুন ফাটিয়ে দিলো পুরো। যেদিন শুনেছি সেনেগাল এবার আফ্রিকাসেরা হয়েছে আর মিশরের মতো দল উঠতে পারেনি, কিরকম তখন থেকেই মনে হয়েছিল যে আফ্রিকার দলগুলো এবার যথেষ্ট বেগ দেবে। ব্রাজিল বোধহয় ধরতে পারেনি ব্যাপারটা। আমি ভেবেছিলাম ক্যামেরুন অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল। ভুল ভেবেছিলাম। পুরো খেলাটা তো অসাধারন খেললোই, বরং ঠিক করে দেখলে বলতেই হবে যে দ্বিতীয় হাফে ব্রাজিলকে সম্পুর্ণ ব্যাকফূটে রাখলো। চকিত আক্রমণ থেকে আবুবকরের হেড হয়ে যে গোলটা হলো, তা যেকোনো গোলকীপারকে বোকা বানিয়ে দেবে। এ তো গেলো গোল করার কথা। অপর প্রান্তে সিংহের মতো নিজের দেশের গোলটা প্রাণ দিয়ে আটকালেন যিনি সারা খেলাটা জুড়ে, সেই এপাসিকে সেলাম। বারবার দুরন্ত সেভ করতে করতে ও গোলের ভিতরে মাছি না গলতে দেওয়ার মতো পাহারা দিয়ে তিনি ব্রাজিলের মনোবল ভেঙে দিচ্ছিলেন। খেলাটাতে অসাধারন কিছু মুহুর্ত আনার জন্য পুরো ক্যামেরুন দলটাকে কুর্নিশ জানাতেই হবে। They played just awesome football.
সৌন্দর্য ও গতি মিশিয়ে যে খেলাটা উপহার দিলো দলদুটো, তার জন্য ধন্যবাদ জানাই তাদের। তবে তৃতীয় আরেকজনের কথা এবার তবে না বললেই নয় যিনি খেলাটাকে অন্য মাত্রা দিচ্ছিলেন, ম্যাচের দায়িত্বে থাকা ইসমাইল এলফ্যাত। খেলোয়াড়দের পিঠ চাপড়াতে চাপড়াতে, ঘাড়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েও হাসিমুখে যে লাল কার্ড (regulation penalty) দেখানো যায় খেলার আমেজে পরিবর্তন না এনে, তা এই খেলাটা না দেখলে হয়তো কোনোদিন বুঝতে পারতাম না। যেমন বড় মাপের দলের খেলা, তেমন দক্ষতাই দেখাল যেন তাদের খেলার পরিচালক!
No comments:
Post a Comment