রজতাভ আছে, খরাজ আছে, তার উপর অনির্বাণ চক্রবর্তী পর্যন্ত আছে। মানে ব্যাপারটা পুরো জমে কুলপি করার জন্য যা উপকরণ দরকার সমস্তটা ছিল! কিন্তু তাও গণ্ডগোল রয়ে গেল। মুশকিল হচ্ছে, রজতাভ দত্ত, খরাজ মুখার্জ্জী, অনির্বাণ চক্রবর্তী প্রমুখ বলিষ্ঠ অভিনেতাদের সাথে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করতে খানিকটা সাবলীলতা দরকার। তবে সেই সাবলীলতার অভাব বাকি অভিনেতাদের খামতির জন্য না পরিচালকের ভুলে সেটা অবশ্য বলা মুশকিল।
গল্পটার প্লট নতুন রকমের! রাজর্ষি দাস ভৌমিকের 'চড়াই হত্যা রহস্য' অবলম্বনে রচিত ধারাবাহিকটি অভিরূপ ঘোষ কেন, যেকোনো পরিচালকের জন্যই সাহসী পদক্ষেপ। মানুষ খুন নিয়ে তো গল্প প্রচুর আছে, কিন্তু চড়াই পাখিদের হত্যা নিয়ে যে কাহিনী হতে পারে এবং তার উপর ভিত্তি করে রুপোলি পর্দায় পরিবেশন করা, আছে কি? এই ব্যাপারে পরিচালক অনেকের থেকে এগিয়ে।
তার সাথে আবার যোগ হয়েছে লালবাজারের কাল্পনিক এক বিভাগ - অস্বাভাবিক অপরাধ বিভাগ, যার ইংরেজী নাম ডিপার্টমেন্ট অফ আনইউজুয়াল কেসেস। গালভরা এই পোষাকি নামের আড়ালে যে বিভাগটি বিরাজমান, সেটা আদতে চাকরীর পানিশমেণ্ট পোস্টিং। কোনো অফিসারের উপর ডিপার্টমেণ্ট খাপ্পা হলেই, তাকে পাঠানো হয় এখানে। বিভাগীয় প্রধান এবং আপাতদৃষ্টিতে বহুদিনের একমাত্র পার্মানেণ্ট কর্মচারী কানাই চরণ দাসের ভাষায়, এই পোস্টিংএ বাকিদের মেয়াদ তিন মাস, তারপরেই স্বভাব ঠিক হলেই স্বাভাবিক জায়গায় বদলি।
যাইহোক, বিভাগ যখন অস্বাভাবিক অপরাধের, তাই পাখি খুনের তদন্ত যে এদের এক্তিয়ারে পড়বে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অস্বাভাবিক ব্যাপার হচ্ছে যে দর্শকরা কিন্তু প্রথমেই জেনে যাবে কে এগুলো করছে। কিন্তু ঘটনা হল, কেন যে বেছে বেছে চড়াই পাখিদের দলকে দল মেরে ফেলার প্রচেষ্টা হচ্ছে বিভিন্ন গ্রামে, রহস্যটা সেখানেই। তাই আনইউজুয়াল কেস বিভাগ যখন খুনিকে ধরতে মাথা ঘামাবে, দর্শকেরাও ভাববে এই আপাত অস্বাভাবিক খুনের কারন বার করতে।
স্বচ্ছন্দ গতির এই নতুন আঙ্গিকের সিরিজটি প্লটের চমক তো দিয়েছে, কিন্তু সামগ্রিক অভিনয় ও পরিচালকের মনোযোগ যদি আরেকটু উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া যায়, তাহলে হইচইয়ের এই সিরিজটির ভবিষ্যত অস্বাভাবিকভাবে আকর্ষণীয় হওয়ার ক্ষমতা রাখবে।
No comments:
Post a Comment