Sunday, December 11, 2022

কাতার quips: Croatia vs Brazil

ব্রাজিলের বিশ্বকাপ থেকে হেরে এবারের মতো ছিটকে যাওয়াতে মনটা বেশ খারাপ হয়ে আছে!
খেলার ব্যাপারে লেখা থেকে কিছুদিনের জন্য হলেও এবার তাই সাময়িক বিরতি!

Friday, December 9, 2022

কাতার quips: Morocco vs Spain

জয়টা মনে হলো স্পেনের হাত থেকে ছিনিয়ে নিলো মরক্কোর একরোখারা। বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের একমাত্র অঘটনটা কিন্তু তারাই ঘটালো। তবে অঘটন বলি কি করে! খেলায় অঘটন তো বলা হয় যখন কোনো দল তাদের থেকে অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী দলকে হারিয়ে দেয়! কিন্তু স্পেনের বিরুদ্ধে মরক্কোর খেলা দেখে স্পেনের তুলনায় মরক্কোকে কি কিছু কম শক্তিশালী মনে হচ্ছিল? গোটা ম্যাচটা জুড়ে যা ডিফেন্স দেখালো ও তার সাথে opportunistic aggression, দলটাকে হালকা করে দেখলে পরে ঠকে যাওয়ার সম্ভাবনা খুব! স্পেনের বিরুদ্ধে এই ডিফেন্স দেখে আমি তো মুগ্ধ! ইতালির ডিফেন্স বিখ্যাত, কিন্তু এবার তাদের সেরা রক্ষনের শিরোপা না হাতছাড়া হয়ে যায়! অবশ্য মরক্কোকে আমার এই দিন বারেবারে স্পেনের মতো লাগছিল, গুলিয়ে যাচ্ছিল। তার কারণ হলো তাদের জামাগুলোর রঙ লালচে। স্পেনের খেলছে আর লাল জামায় সজ্জিত প্রতিপক্ষ - হয় নাকি!
যাইহোক, মরক্কোর যে ভুলটা শোধরানো দরকার, তা হলো গোলের কাছে তাদের পায়ের জোর হারিয়ে ফেলার অভ্যাসটা। যেহেতু এই জোরটা মনের থেকে আসবে, তাই বিপক্ষের কাছে মানসিক যুদ্ধটাতে তাদের জিততে হবে।
তবে স্পেনকে যে তারা চাপে রাখতে চলেছে, তা খেলাটার শুরুর আগে থেকেই মনে হচ্ছিল তাদের দেখে। তিনটে ব্যাপার চোখে পড়লো আলাদা করে।
প্রথমটা হলো, মরক্কোর জাতীয় সঙ্গীত চলাকালীন হাকিম জাইজির মুখটা চোখ বন্ধ অবস্থাতেও কোনো দৃঢ় প্রতিজ্ঞার ইঙ্গিত দিচ্ছিল। দ্বিতীয় ব্যাপারটা অম্রাবতের পায়ের চোট নিয়ে রক্ষণ সামলানোর জেদ। আর তৃতীয়টা হলো তাদের গোলকিপার বনো। কোনো কঠিন কাজকে খুব সহজে করে ফেললে, ব্যাপারটাকে হাসতে হাসতে করে ফেলল বলে। বনোকে দেখে ঠিক এটাই মনে হচ্ছিল। এরকম সদাহাস্যময় কোনো গোলরক্ষক আগে দেখেছি বলে তো মনে পড়েনা। জোরদার হতে চলেছে পরের ম্যাচ, দেখি কি করে হাসিখুশি অথচ কখনো জেদি দলটা!

Wednesday, December 7, 2022

কাতার quips: Brazil vs South Korea

এ কোন ব্রাজিলকে দেখলাম? কিরকম যেন বদলে গেছে দলটা। ভুল বললাম! দলটা সেই পুরনো ব্রাজিলের চেনা ছন্দে মাতিয়ে দিলো। বদলটা মাঝে হয়ে চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল। আবার তারা তাদের জাদুসমেত হাজির। কোথায় সেই গোলের কাছে হারিয়ে যাওয়া ব্রাজিল দল! এবার তো গোলের গন্ধ পেলেই বল গোলে ঢুকছে। দলটাকে আবার করে চনমনে লাগছে বাচ্ছাদের মতো। নেইমার এফেক্ট তো রয়েছেই, দলে আবার ঢুকে পড়ে খেলার রঙটাই বদলে দিল। তবে দলটা বেশ কিছু ব্যাপারে বাকিদের থেকে অবশ্যই আলাদা। নিজেরা নাচছে, বিপক্ষকে নাচাচ্ছে, তারপর গোল দিয়ে দেখলাম কোচকে নিয়ে নাচছে। নাচ করতে চাইছে না খেলতে, বোঝা মুশকিল!
তবে কোরিয়া খারাপ খেলা দেখালো না ব্রাজিল ভালো, তা পরের ম্যাচগুলোর আগে বলাটা ঠিক হবে না। যতই হোক, পরের ম্যাচগুলিতে প্রতিপক্ষরা অধিকাংশই কোনো না কোনো বছরে এই প্রতিযোগিতার ফাইনালিস্ট বা বিশ্বকাপজয়ী!
তবে ম্যাচের প্রতিটি গোল - ব্রাজিলের চারটে আর দক্ষিন কোরিয়ার একটা গোল - হলো মনজুড়ানো। ভিনিসিয়াসের শান্ত কিন্তু বুদ্ধিদীপ্ত গোল, নেইমারের পেনাল্টির সম্মোহনী ক্ষমতা, রিচার্লিসনের শিল্প, পাকেতার সুযোগসন্ধানী টোকা, পাইকের দূরপাল্লার চকিত গোল - প্রত্যেকটা অনবদ্য।
তবে এলিসন দেখালো গোল আটকানোতেও কি জাদু দেখানো যায়। ব্রাজিলের এই গোলকিপারটি বেশ অন্য ধরনের। গোল ছেড়ে উইং থেকে বলের সাথে গল্প করতে ছুটছে, হামেশাই মাঝমাঠ খালি দেখলে উঠে আসছে বল ধরতে। কিন্তু যেই দেখছে বল বিপক্ষের কাছে, তার সতর্ক পাহারায় গোল প্রায় প্রতিবার আটকে যাচ্ছে। কখনো লাফিয়ে তো কখনো যেন উড়ে, আবার কোনোবার নিজের শরীরকেই বল ও গোলের মাঝের বাধা হিসেবে ব্যবহার করে গোল আগলানোর কি অদম্য তাগিদ! প্রায় প্রতিবার তার জেদের কাছে হার মানতে বাধ্য হচ্ছে প্রতিপক্ষ।
দেখা যাক পরবর্তী খেলাতেও আবার ব্রাজিল কোন জাদু দেখায়!

Tuesday, December 6, 2022

কাতার quips: Croatia vs Japan

খেলাটা ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান হচ্ছে না জাপান-ক্রোয়েশিয়া হচ্ছিল বোঝা যাচ্ছিল না! কি যে খেলছে, কেন যে খেলছে, কেউ জানে না! বল থ্রো করছে, লাইনের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে, কর্নার কিকের জোরালো শটের চোটে বল অন্য কর্নার দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে! ওপেন নেট পেয়ে গোল করতে পারছে না আর লোকজন লং শট যা নিচ্ছে মনে হচ্ছে বল কাতার থেকে এই দুই দেশের মধ্যে কোথাও না ল্যান্ড করে আর এই চরম টেনশনের মুহুর্তে জাপানী কোচের ছোট খাতাটায় নোট নেওয়া দেখে মনে হলো ভাইপোর বিয়ের বউভাতে প্লেট হিসেব করছে। কি বোরিং খেলা যে হলো, বলার নয়! ভাবলাম, ব্রাজিলের খেলা দেখার আগে ঘুমিয়ে নেব, কিন্তু এরা করতে দিলে তো! হাফটাইমের ঠিক আগে এক দল গোল দিল, হাফটাইম হয়ে খেলা শুরু হতেই আরেক দল ফেরত দিয়ে দিল! ব্যস, আবার অচলাবস্থা, যদিও গোলদুটো খেলার কয়েকটা মুহুর্ত জমিয়ে দিয়েছিল।
তবে খেললো বটে গোলকীপারদুজন, তারাই এই ম্যাচের ঠিকঠাক হিরো!
অতিরিক্ত সময় ধরে খেলা চলতে থাকলেও, এই দুটো দলের মধ্যে কে যে বিরক্তিতে অন্যকে ছাপিয়ে যাচ্ছিল কে বুঝবে! তবে জাপান টাইব্রেকারে যে কি করে এই আজব ব্যাপার দেখালো কে জানে? চারটের মধ্যে একটা গোল দিতে পারলো! এরকম করলে এদের বাড়ি ফিরে যাওয়াই উচিৎ। সঙ্গে ক্রোয়েশিয়াকেও নিয়ে যেতে পারলে আনন্দ পেতাম, কিন্তু তা তো হওয়ার জো নেই। তবে ক্রোয়েশিয়া এরকম খেলা চালিয়ে গেলে চাইব খুব তাড়াতাড়ি তাদেরও যেন নকআউট হয়ে যায়! যে কোনো খেলা জেতার চেয়ে ফুটবলের জেতাটা বেশি জরুরি!

Saturday, December 3, 2022

কাতার quips: Brazil vs Cameroon

ক্যামেরুন গোল করেছে, গোল আটকেছে, তাই জিতেছে! ব্রাজিল গোল করেনি, আটকাতেও পারেনি, তাই হেরেছে! ব্যাস, এই হলো total summary! তবে গোল যে একটাই খেলো, এটাই অনেক! এডারসন না কয়েকটা আটকালে ব্যাপারটা আরো খারাপ হতো। ফলাফলটা অবাক করে দেওয়ার মতো তেমন কিছু নয় অবশ্য। এটা হওয়ারই ছিল, দেখার ছিল কবে নাগাদ হয়! এই ব্রাজিল team নাকি বিশ্বকাপ জিতবে.... তাহলেই হয়েছে! এরকম কিছু ঘটলে না দেখা যায় এদের সমর্থকেরাই চমকে উল্টে গেছে শকের চোটে! মানছি, আগের দুটো ম্যাচের তৈরী প্লেয়াররা অধিকাংশই খেলেনি, কিন্তু তা বলে এত সুযোগ নষ্ট হবে? বিপক্ষের পা থেকে বলের দখল নিচ্ছে তাড়াতাড়ি, নিজেদের মধ্যে স্বাভাবিক বোঝাপড়ায় দারুন সব মুভমেণ্ট তৈরি করছে, বিপক্ষের পেনাল্টি সীমানার বক্সে ঢুকে পড়ছে অতর্কিতে। কিন্তু ব্যস, তারপর কি যে হচ্ছে কে জানে, ওই পর্যন্ত গিয়ে যেন কিরকম তারা কুম্ভমেলায় হারিয়ে যাচ্ছে। এক মার্টিনেল্লি বাদে কাউকে গোলে বল রাখতে দেখলাম না। শুধু ওর জন্যই খারাপ লাগছিল, প্রচুর চেষ্টা করেছিল কিন্তু প্রতিবার বিফল হলো। Unfortunate, but hopefully he will have his day sometime in the future! বাকিরা তো শুধু ছড়ানোর প্রতিযোগিতা করছিল। ব্রুনো গিমেরেশের কথাই ধরা যাক না হয়। তার অবস্থা হলো রথের মেলায় গিয়ে রথটাই দেখতে না পাওয়ার মতো। ম্যাচের দিনে তাকে বোধহয় বল সমেত খালি গোলপোস্টের সামনে ছেড়ে দিলেও গোল করতে অক্ষম হতো। এডারসন সেই তুলনায় গোলটা ঠিকঠাক রক্ষা করছিল। যে গোলটা খেয়েছে সেটা তার ভুলের তুলনায় বিপক্ষের কৃতিত্ব বেশি দাবী করবে। গোলপার্থক্য বাড়তে পারতো তার দারুন কিছু সেভ না থাকলে।

অপরদিকে ক্যামেরুন ফাটিয়ে দিলো পুরো। যেদিন শুনেছি সেনেগাল এবার আফ্রিকাসেরা হয়েছে আর মিশরের মতো দল উঠতে পারেনি, কিরকম তখন থেকেই মনে হয়েছিল যে আফ্রিকার দলগুলো এবার যথেষ্ট বেগ দেবে। ব্রাজিল বোধহয় ধরতে পারেনি ব্যাপারটা। আমি ভেবেছিলাম ক্যামেরুন অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল। ভুল ভেবেছিলাম। পুরো খেলাটা তো অসাধারন খেললোই, বরং ঠিক করে দেখলে বলতেই হবে যে দ্বিতীয় হাফে ব্রাজিলকে সম্পুর্ণ ব্যাকফূটে রাখলো। চকিত আক্রমণ থেকে আবুবকরের হেড হয়ে যে গোলটা হলো, তা যেকোনো গোলকীপারকে বোকা বানিয়ে দেবে। এ তো গেলো গোল করার কথা। অপর প্রান্তে সিংহের মতো নিজের দেশের গোলটা প্রাণ দিয়ে আটকালেন যিনি সারা খেলাটা জুড়ে, সেই এপাসিকে সেলাম। বারবার দুরন্ত সেভ করতে করতে ও গোলের ভিতরে মাছি না গলতে দেওয়ার মতো পাহারা দিয়ে তিনি ব্রাজিলের মনোবল ভেঙে দিচ্ছিলেন। খেলাটাতে অসাধারন কিছু মুহুর্ত আনার জন্য পুরো ক্যামেরুন দলটাকে কুর্নিশ জানাতেই হবে। They played just awesome football.

সৌন্দর্য ও গতি মিশিয়ে যে খেলাটা উপহার দিলো দলদুটো, তার জন্য ধন্যবাদ জানাই তাদের। তবে তৃতীয় আরেকজনের কথা এবার তবে না বললেই নয় যিনি খেলাটাকে অন্য মাত্রা দিচ্ছিলেন, ম্যাচের দায়িত্বে থাকা ইসমাইল এলফ্যাত। খেলোয়াড়দের পিঠ চাপড়াতে চাপড়াতে, ঘাড়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েও হাসিমুখে যে লাল কার্ড (regulation penalty) দেখানো যায় খেলার আমেজে পরিবর্তন না এনে, তা এই খেলাটা না দেখলে হয়তো কোনোদিন বুঝতে পারতাম না। যেমন বড় মাপের দলের খেলা, তেমন দক্ষতাই দেখাল যেন তাদের খেলার পরিচালক!