অবশ্য পরিচালককে একটা ব্যাপারে কিন্তু তারিফ করতেই হবে - ফেলুদাকে সেলফোনের যুগে এনে ফেলেও এতটুকু বেমানান করে দেখাননি কাহিনিটাকে, উপরন্তু স্মার্টফোনের এক বিশেষ বিরক্তিকর 'ওভারস্মার্ট' আচরণকে জুতসইভাবে ব্যবহার করে গল্পে বর্ণিত প্রযুক্তির মূখ্য এক ভূমিকার যুক্তিগ্রাহ্য আধুনিকিকরণ করেছেন যা দেখে রায়মশাই পর্যন্ত খুশি হতেন মনে হয়।
তারিফ পাওয়ার যোগ্য অবশ্য আরো তিন অভিনেতা। প্রথম দুজনের নাম হলো দেবপ্রিয় মুখার্জ্জী ও সৌরসেনী মৈত্র। দুজনেই এমন দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যে দুটি চরিত্র বইতে নেই, কিন্ত গল্পের খাতিরে এমনই বিশ্বাসযোগ্যভাবে অভিনয়টা করেছেন যে আমাকে বইটা খুলে নিশ্চিত হতে হয়েছে চরিত্রদুটির উপস্থিতি সম্পর্কে। কাহিনীতে নতুন চরিত্র ঢুকিয়েও তাকে নিপুণভাবে গল্পের মধ্যে মিশিয়ে দেওয়ার জন্য তাই পরিচালক ও এই দুই অভিনেতাদের প্রশংসা করতেই হবে। দেবপ্রিয় মুখার্জ্জী এক মরাঠি পুলিশ অফিসারের চরিত্রে যে সাবলীল অভিনয়টা করলেন, দেখে কে বলবে তিনি বাঙালি না মরাঠি? এদের বাদ দিয়ে তৃতীয় যে অভিনেতা পুরো সিরিজটা মাতিয়ে দিলেন, সেই রুদ্রনীল ঘোষ সেরা অভিনয়টা উপহার দিলেন নিশিকান্ত পাকড়াশির চরিত্রে। 'গ্যাংটকে গণ্ডগোল' যেহেতু 'সোনার কেল্লা'র ঠিক আগের উপন্যাস, তাই লালমোহনবাবু এতে নেই। সত্যজিতের ভাবনায় থাকা লালমোহনবাবুর কাছাকাছি চরিত্র এই নিশিকান্ত পাকড়াশির ভূমিকায় রুদ্রনীল মজাদার অথচ হালকা সন্দেহজনক এই চরিত্রটির মধ্য দিয়ে কৌতুকের দরকারটা মিটিয়ে দিয়েছেন। আবার সিধুজ্যেঠার চরিত্রে প্রবীণ অভিনেতা বিপ্লব চ্যাটার্জ্জীকেও বেশ মানিয়ে গেছে।
তাই রুদ্ধশ্বাসে পড়ে ফেলার মতো টানটান কাহিনি, 'গ্যাংটকে গণ্ডগোল'কে টেনে টেনে দশটা পর্বে দেখালেও বিশেষ কিছু চরিত্রের জন্য সিরিজটা দর্শকদের কাছে খানিকটা নতুনত্ব আনতে পারে।
No comments:
Post a Comment