বিছানায় পড়ে থাকা এক রক্তাক্ত দেহ, এক অভিযুক্ত ড্রাইভার, জনতার দরবার, ময়নাতদন্তে পাওয়া কিছু তথ্য, পুরুষবিদ্বেষী এক দাপুটে মহিলা উকিল নিযুক্ত সরকারপক্ষে বিচারের দাবীতে! ব্যস, আর কি চাই? অভিযুক্তের দোষী সাব্যস্ত হতে তো আর কোনো বাধাই নেই! জনতা তো রায় দিয়েই দিয়েছে! বিচারেও তাই ধার্য হল। অভিযুক্ত দোষী! অতএব শাস্তি চরম দণ্ড! তাই হুকুম হল ফাঁসির! জনতা ওউকিল, উভয়েই খুশি!
কিন্তু বাদ সাধল এক নাছোড় উকিল। একটা ছোট্ট বিসদৃশতা, আর তার থেকেই নতুন করে প্রমাণ যোগাড় করে বিচারের রায়কে আবার একবার খতিয়ে দেখার আর্জি! তাই আবার শুরু হলো তদন্ত। আবার আদালত বসল বিচার করতে! বেরিয়ে এল কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য! এই সাহসী সিদ্ধান্তের জেরে আর সত্যকে বের করতে অ্যাডভোকেট অচিন্ত্য আইচ শুরু করলো এক অসম লড়াই! সাথে থাকল কয়েকজন শুভাকাঙ্খী আর ফাউ হিসেবে জুটল জনরোষ! ঝামেলা বাড়াতে শুরু হল খুচরো কিছু উৎপাত! তার মধ্যেই চলল অচিন্ত্যর লড়াই! এ যেন হেরে যাওয়ার আগে ফুরিয়ে না যাওয়ার তাগিদ।
রহস্যের মোড়কে ঘেরা এই সিজন বেকার কোনো সময় নষ্ট না করে এক সাবলীল গতিতে এগিয়েছে! কয়েক জায়গায় ভুলত্রুটি চোখে পড়তেই পারে, কিন্তু বিষয়ের প্রাসঙ্গিকতায় তাকে গুরুত্ব না দিলেও চলবে! যে সমাজে মহিলাদের সন্দেহজনক মৃত্যুর দায় আর্থসামাজিক স্তরের পিছনের দিকের মানুষের উপর চাপিয়ে দেওয়াটা দস্তুর, সেখানে এরকম কিছু ঘটনাকে আমাদের সামনে তুলে আনাটা বোধহয় সময়ে সময়ে দরকার! তার সাথে বোধহয় মানুষের মনের ঘৃণার দিকটাকে প্রয়োজন চিনিয়ে দেওয়ার, কারণ মানবসভ্যতার সবচেয়ে ভয়ানক প্রবৃত্তি বোধহয় এই রিপুটি যা যুক্তিবুদ্ধির তোয়াক্কা না করে মুহুর্তের মধ্যে দোষীকে ভুলে নিরপরাধকে দোষী বানিয়ে ফেলতে পারে! দর্শকদের চোখটা এভাবে কল্পনার জগতে খুলে দিতে পারলে বাস্তবেও হয়তো একদিন আশপাশের অমানবিকতার বিরুদ্ধে তারা নতুন আঙ্গিকে প্রশ্ন করতে পারবে!
এরকম সিজনের জন্য তাই হইচইকে ধন্যবাদ,
মনকাড়া অভিনয়ের জন্য ধন্যবাদ প্রাপ্য দেবরাজ ভট্টাচার্য, সত্যম ভট্টাচার্য, সোহিনী সেনগুপ্তর,
ধন্যবাদ সামগ্রিকভাবে পরিচালক জয়দীপ মুখার্জ্জীকে ও এই সিজনের বাকি সকল কলাকুশলীকে!
No comments:
Post a Comment